
ইসলাম আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উত্তম আদব ও শিষ্টাচার শিক্ষা দিয়েছে। বিশেষত, অন্যের ঘরে প্রবেশের সময় কীভাবে শালীনতা বজায় রাখতে হবে এবং অনুমতি নিতে হবে, তা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
“হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে তাদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না; এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, হয়তো তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে।” (সুরা নূর: ২৭)
এ নির্দেশনা শুধু অচেনা বা দূরের মানুষের জন্য নয়, নিকট আত্মীয় বা আপনজনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এমনকি পরিবারের সদস্যদের ঘরেও প্রবেশের আগে অনুমতি চাওয়া ইসলামের আদবের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
“তোমাদের সন্তান-সন্ততি যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তারাও যেন অনুমতি চায় তাদের অগ্রজদের মতো। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।” (সুরা নূর: ৫৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শিক্ষাও এ ব্যাপারে অত্যন্ত স্পষ্ট। এক সাহাবী নবিজির (সা.) ঘরে সালাম না দিয়ে প্রবেশ করেন। তখন নবিজি (সা.) তাকে বাইরে গিয়ে পুনরায় সালাম দিয়ে অনুমতি চেয়ে প্রবেশ করতে বলেন। (সুনান আবু দাউদ, সুনান তিরমিজি)
উঁকি দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা
ইসলামে শুধু অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নয়, উঁকি দেওয়াও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি কারও অনুমতি ছাড়া তার ঘরে উঁকি দেয়, তার চোখ তুলে ফেলা বৈধ।” (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
শিক্ষা ও প্রয়োগ
আমাদের উচিত সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই এই আদব শিক্ষা দেওয়া। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তাদের জানানো যে, বাবা-মা বা ভাই-বোনের ঘরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও অনুমতি নেওয়া জরুরি। এভাবে পরিবারে শিষ্টাচার প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়ক।
আসুন, আমরা ইসলামের এই উত্তম আদবগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করি এবং অন্যদেরও তা পালনে উৎসাহিত করি।