ইরান: আশা আতঙ্ক ক্ষোভ ও যুদ্ধের গল্প

যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় ইরানের মূল তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হওয়ার পর দেশজুড়ে আতঙ্ক, ক্ষোভ ও হতাশায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে আবার আশা করছেন, এই সংঘাত হয়তো শেষের দিকে পৌঁছেছে এবং দেশ নতুন পথে অগ্রসর হবে।

আজ ২৩ জুন সোমবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, বিবিসি পারসিয়ানকে দেওয়া বার্তায় শাহলা (ছদ্মনাম) নামের এক নারী বলেন, আমার দিন-রাত একই রকম হয়ে গেছে। নিজেকে পঙ্গু মনে হয়। সারাদিন-সারারাত শুধু ছাদের দিকে চেয়ে থাকি। বুঝতে পারছি না, সামনে কী হতে যাচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চমকে পড়ছি।

আরেক নারী মেহরি (ছদ্মনাম) বলেন, আমার জীবনে কখনও এমন বেদনা আর ক্ষোভ অনুভব করিনি। তবে এক অর্থে এটা আমাকে এক ধরনের স্বচ্ছতা দিয়েছে — মনে হচ্ছে আমি নিজের চেয়ে বড় কিছুর সঙ্গে যুক্ত। এই যুদ্ধ মূলত তিনজন মানুষের সংঘাত — তিন দেশের তিন নেতা, যাদের নিজস্ব মতাদর্শ আছে। (তিনি নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত ছিল ট্রাম্প, নেতানিয়াহু ও খামেনির দিকে।)

উত্তর-পশ্চিম ইরানের মাকুর বাসিন্দা হোমায়ুন বলেন, কষ্ট হচ্ছে, তবু আমরা দেশকে ছেড়ে যাব না। প্রয়োজনে প্রাণ দেব, কিন্তু আমেরিকা আর তার দোসরদের আমাদের দেশে অন্যায় করতে দেব না।

অন্য এক ব্যক্তি বলেন, আমার বাচ্চা কয়েক দিনের মধ্যেই জন্মাবে। আশা করি তার জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নতুন এক ইরানের জন্ম হবে, যা আন্তর্জাতিক পরিসর ও দেশের ভেতরে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবে। নিরাপত্তা বাহিনী যেন আসল হুমকির দিকে নজর দেয়, হিজাবের নামে জনগণকে দমন না করে।

এদিকে, সীমান্ত পার হয়ে আর্মেনিয়ার দিকে পালিয়ে যাওয়া তেহরানের এক নারী বিবিসিকে জানান, তিনি বিদেশি শক্তির চাপিয়ে দেওয়া শাসন পরিবর্তনের পক্ষে নন। আমরা নিজেরাই ভেতর থেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করছিলাম। বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া পরিবর্তন ভালো হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ইরানের ইস্পাহান, নাতানজ ও ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করা হয়েছে। তিনি ইরানকে ‘শান্তি বা বিপর্যয়’ এর মধ্যে একটি বেছে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।