ফ্যাসিবাদের মনোরঞ্জনে ইসলামোফোবিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: পাঁচ শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস (সমাপ্ত)

আওয়ামী দু:শাসনের কালে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সফরনামা

সালিমা মেহরা


এই লেখা লিখতে বসে আমার কথা হচ্ছিল ভুক্তভোগী ফারজানার সাথে।

ফারজানাকে বললাম—
“আইনী লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন না?”

ফারজানা বলল:
“তদন্ত কমিটি আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিল: সেদিন আসরের নামাজের পর তুমি কী পড়ছিলে?
আমি বলেছিলাম: সূরা ওয়াকিয়ার কিয়ামত সম্পর্কিত আয়াতগুলো পড়ছিলাম।
তখন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অনির্বাণ মোস্তাফা স্যার কিয়ামত নিয়ে বিদ্রুপ করছিল।
বলছিল: ‘ও কিয়ামত! এরপর কী হবে?’ আর হাসছিল।
ইসলামের পর্দার বিধান নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছিল।
তাই আমার আইনী লড়াই করে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে) আর ফিরে আসতে ইচ্ছা হয়নি।”

পরবর্তীতে ফারজানা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করার সুযোগ পেয়েও ভর্তি হননি।
“মুসলিম নামধারী যে শিক্ষকেরা ইসলামকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারে, তাদের অধীনে পড়তে আমার ভালো লাগেনি।”

ফারজানার ঈমানদীপ্ত অনুভূতি জানার পর আমি ভাবছিলাম—
যে হৃদয় তাঁর রবের প্রতি, ইসলামের প্রতি এমন দুর্দান্ত দৃঢ়চেতা ভালোবাসা পোষণ করে, তার পরাজয় কি পাশ্চাত্য সভ্যতার দাসত্ব করা ইসলামোবিকদের কলম দিয়ে লেখা যায়?

আমি রওশন আরা আপুর ঈমানদীপ্ত কথা আর বনি আপুর চোখের দৃষ্টিতে দেখেছি—
আমাদের গন্তব্য তো এক সোনার তোরণের দিকে, যা এ ভূ-পৃষ্ঠে নেই।

এই নিরাপরাধ, সাহসী, মেধাবী, ইসলামপ্রিয় ছাত্রীর উপর করা যুলুমের প্রতিবাদ ঈমানের দাবি।
ধিক্কার জানাই সেই সব শিক্ষকদের, ইসলামফোবিয়া যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ফ্যাশন এবং দুনিয়াবী তরক্কির অবলম্বন।
নিকৃষ্ট এই বুদ্ধিবৃত্তিক কারবারিদের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ জিঘাংসার শিকার হয়েছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ মেধাবী ছাত্রী।

পার্থিব মানদণ্ডে এর ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়।
সম্ভব নয় জীবনের এতগুলি বছর ফিরিয়ে দেওয়া।

তবে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পীঠস্থান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায়শ্চিত্ত হতে পারে এই ঘটনার পুনঃতদন্তের মাধ্যমে এই জঘন্য অনাচারের সাথে জড়িতদের বিচার, সীমা ও মাইশা ইসলামের সার্টিফিকেট ফিরিয়ে দেওয়া, এবং ভুক্তভোগী সবাইকে ন্যায্য ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমে।

জুলাইয়ের বিপ্লবী এবং এই বিপ্লবের পাহারাদারদের আহ্বান জানাই এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য।

(সমাপ্ত)