আওয়ামী দু:শাসনের কালে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সফরনামা
– সালিমা মেহরা –
বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অভিযোগ ছিল, ২০১৫ সালের ১৪ই নভেম্বর বহিরাগত তিন মেয়েসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত ছাত্রী অপরাজিতা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত ছিল। এর ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের বসবাস ও আচরণ সংক্রান্ত শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ ১৯(ক) অনুযায়ী বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।
অথচ বহিষ্কার হওয়া পাঁচ ছাত্রীর মধ্যে মাইশা ইসলাম ছাড়া কেউই হলে থাকতেন না। আর ১৪ নভেম্বর মাইশা হলে নামাজ রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রীসহ কুরআন-হাদিস পড়ছিলেন। সেখানে বহিরাগত কেউ ছিল না।
তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ বলতে কি আসরের পর মাইশার কুরআন পাঠকেই বোঝানো হয়েছে? নাকি অনাবাসিক ছাত্রী সীমার পর্দার বিধান মেনে চলাকেই টার্গেট করা হয়েছে?
সুনির্দিষ্ট কোন আইনবিরোধী কাজ কি সত্যিই ছিল?
ব্যক্তি তাঁর ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা কবে থেকে এ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড হলো??
কার জন্য উচ্চশিক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা পাঁচ মেধাবীর জীবন তছনছ করে দেওয়া হলো?
পাঠক হয়তো ভাবছেন, সানজানা আফরিন বনি তো ছাত্রী সংস্থার সদস্যা ছিলেন। হ্যাঁ, ছাত্রী সংস্থা তখন কোন নিষিদ্ধ সংগঠন ছিল না। ছাত্রী সংস্থা কোন রাজনৈতিক সংগঠনও নয়। আর বনি আপু ছাত্রী সংস্থার কাজ ক্যাম্পাসে করতেন না।
তিনি খালিশপুর নিজ বাসায় বাবা-মায়ের সাথে থাকতেন, সেখানেই ইসলামপ্রিয় ছাত্রীদের মাঝে কাজ করতেন। তিনি গ্রেফতার হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রেফতারকৃত ছাত্রী সংস্থার এক বোনের ল্যাপটপে সদস্যা লিস্ট থাকার কারণে। সদস্যা হওয়ায় বনি আপুর নাম ছিল সেখানে। সেই লিস্ট খুলনা পুলিশ বিভাগের কাছে পৌঁছায়।
হাসিনা রেজিমের অতিউৎসাহী পুলিশ গ্রেফতার করে বনি আপুকে। এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য ছাত্রীদের কোন সংযোগ ছিল না।
তবে কি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট প্রশাসনের সুনজর পাওয়ার আশা আর ইসলামফোবিক মনোভাবই ছিল ইসলামপ্রিয় পাঁচ মেধাবী ছাত্রীর শিক্ষা জীবন ধ্বংসের কারণ??
জানি না বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কেন এ কাজ করেছিল। তবে বহিষ্কারের পূর্বে তদন্ত আর জিজ্ঞাসাবাদের নামে চলেছিল মানসিক নির্যাতন আর অপমানজনক ব্যবহার।
কিন্তু বহিষ্কারাদেশের পর পাঁচ ছাত্রীর জীবনে নেমে আসা দুর্ভোগ কিঞ্চিৎ দেখার সুযোগ আমার হয়েছিল।
কি সেই দুর্ভোগ??
(চলবে)