ফ্যাসিবাদের মনোরঞ্জনে ইসলামোফোবিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: পাঁচ শিক্ষার্থীর জীবন ধ্বংস (পর্বঃ ০৩)

সচ্ছল ও অভিজাত পরিবারের সন্তান বনি আপুর জন্য জেল জীবন বেশ কষ্টকর ছিল। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মারাত্মক স্কিন ডিজিজের শিকার হন তিনি।

২০/১১/১৬ তারিখ সন্ধ্যায় জানতে পারি বনি আপু আজ রাতে জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন। একই সাথে খালিশপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতারকৃত আমাদের অগ্রসর কর্মী দুই বোন, নাহিদ ও সোহাগী, এবং তাঁদের সম্মানিতা মাও আজ মুক্তি পাবেন।

মাগরিবের নামাজ পড়ে আপুদের স্বাগত জানাতে জেল গেটে পৌঁছাই আমি ও শম্পা আপু (স্কুল বিভাগীয় সম্পাদিকা, খুলনা মহানগরী)।

জেল গেটে পৌঁছে বাইরে লটকানো জামিনপ্রাপ্তদের লিস্টে বনি আপুর নাম ক্রমানুসারে উপরে, তার তিনজন পর নাহিদ, সোহাগী ও খালাম্মার নাম। নির্দিষ্ট সময়ে জেল গেট থেকে জামিনপ্রাপ্তরা বের হয়ে আসতে থাকেন।

বনি আপু প্রথমে বের হওয়ার কথা থাকলেও বের হয়ে আসেন খালাম্মা, নাহিদ ও সোহাগী। আমাদের মন অজানা শংকায় দুলে উঠে— তবে কি বনি আপু রি-আরেস্ট হতে যাচ্ছেন?
না। আলহামদুলিল্লাহ!

সবার শেষে বের হলেন আপু। কারণ, অন্যদের পেছনে রেখে আপু আগে বের হয়ে আসতে রাজি হননি। অতঃপর, আমরা আপুর সুস্থ হয়ে পড়াশোনা ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার দোয়া করতে করতে বাসায় ফিরে আসি। কিন্তু বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো এক সিদ্ধান্ত আসে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।

৩১/১২/১৬ তারিখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মিটিংয়ে পাঁচ ছাত্রীর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।
০১/০১/১৭ তারিখে ছাত্রীদেরকে চিঠির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।

এরা হলেন—
১. রওশনারা খাতুন – ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন
২. সানজানা আফরিন বনি – গণিত ডিসিপ্লিন
৩. সীমা আক্তার – ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিন
৪. মাইশা ইসলাম – ফার্মাসি ডিসিপ্লিন
৫. ফারজানা – ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ছিল— উক্ত ছাত্রীরা অপরাজিতা হলে বহিরাগত মেয়েসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সিদ্ধান্তে মুহূর্তে পাঁচ পরিবারে নেমে আসে ঘন অন্ধকার।
থমকে যায় পাঁচ মেধাবীর পথচলা।

প্রশ্ন হলো, যে অভিযোগে তাদের এ দণ্ড দেওয়া হয় তা কতটুকু সত্য?
নাকি বহিষ্কারের পিছনে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ইসলামফোবিক মনোভাব ছিল দায়ী?

চলবে