আশুলিয়ায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক, প্রবন্ধিক ও দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের মধ্যে ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সৃষ্ট বিভেদ নিরসন না হলে সামনের দিনগুলো আগের চেয়েও খারাপ হতে পারে।
অনুষ্ঠানটি প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান -এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রব ।
আবুল আসাদের বক্তব্য: তরুণ প্রজন্মের প্রতি আশা ও রাজনীতিবিদদের সমালোচনা
আবুল আসাদ বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনের এক গৌরবময় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে যে, এদেশের তরুণ প্রজন্ম দেশ ও জাতির সঙ্গে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে পারে। অথচ রাজনীতিবিদদের মধ্যে এই নিঃস্বার্থতা দেখতে পাই না। তাদের কাছে বড় হলো ক্ষমতায় যাওয়া। অথচ স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বৈরাচারিতা থেকে দেশকে রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব ছিল, যেটা করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, “যে জাতির অতীত ইতিহাস সামনে থাকে না, সে দেশ টিকতে পারে না।” ভাষা আন্দোলনের মূল্যবোধ এখন আর নেই। পশ্চিমবঙ্গের লোকজন ও আমাদের ভাষা, পোশাক ও চিন্তা-চেতনায় কোনো স্বকীয়তা নেই। এ কারণেই পশ্চিমবঙ্গের লোকজন দু’দেশের মাঝে কোনো সীমান্ত খুঁজে না পাওয়ার কথা বলছেন।
তিনি সেকুলারিজমের নামে কিছু লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “গাছের ডালে বসে গোড়া কাটার মতো কাণ্ড ঘটাচ্ছে এরা। তাদের কারণেই ভাষার সঠিক ইতিহাস এখনও তৈরি হয়নি। সামনেও এ অবস্থার পরিবর্তন হবে কিনা আমরা নিশ্চিত নই।”
ড. মোহাম্মদ আবদুর রবের বক্তব্য: বাংলা ভাষার মর্যাদা সমুন্নত করতে হবে
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ড. মোহাম্মদ আবদুর রব বলেন, আজও কোর্ট-কাচারি, অফিস-আদালত ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি প্রাধান্য পাচ্ছে। এমনকি বিসিএস পরীক্ষায়ও যিনি বাংলায় দক্ষ তাকে বাদ দিয়ে ইংরেজিতে ভালো জানা ব্যক্তির চাকরি হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়।
তিনি মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত করতে বাংলা ভাষায় টেক্সট বই ও পত্র-পত্রিকা রচনায় বর্তমান বিপ্লবোত্তর সরকারকে অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
অনুষ্ঠানটি আব্দুল মতিন , ছাত্র বিষয়ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের সঞ্চালনায় পরিচালিত হয়। বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।