
গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে কক্ষে আটকে নৃশংসভাবে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল কর্মীদের বিরুদ্ধে।
ঘটনার শিকার শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। গত ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর ছাত্রদল কর্মীরা তাকে একটি কক্ষে আটকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মারধর করে। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়। এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় ফজলে রাব্বিকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জানা গেছে, হামলাকারীদের মধ্যে একজন ফজলে রাব্বির সহপাঠী ছিল। মাদ্রাসার অন্য শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে আটক করতে সক্ষম হলেও, বাকিরা পালিয়ে যায়।
ফজলে রাব্বি ছাত্রশিবিরের একজন ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক বিরোধের জেরে তাকে টার্গেট করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ফজলে রাব্বি রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন এবং তার মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা মাদ্রাসার ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে ন্যায়বিচারের দাবি জানায় এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানায়।
তবে, এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত মাদ্রাসা প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, অপরাধীরা যাতে শাস্তি না পেয়ে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই হামলার জেরে মাদ্রাসার অভ্যন্তরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে বলে জানা গেছে। অনেক শিক্ষার্থীই দাবি করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক গ্রুপগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করেছিল, যার চূড়ান্ত রূপ এই হামলা।
বর্তমানে মাদ্রাসার পরিবেশ থমথমে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাদ্রাসার প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।