বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে : খন্দকার মোশাররফ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাজ্যের আলোকে বিনামূল্যে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, প্রত্যেক সংস্কারের বিষয় সরকারকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে জনবান্ধব প্রস্তাব গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপি ক্ষমতায় এলে যুক্তরাজ্যের আলোকে বিনামূল্যে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবা উন্নয়নে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগত। ১৯৭৮ সালে ‘আলমা আতা’ ঘোষণায় স্বাক্ষর দানের মাধ্যমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নিশ্চিতকরণের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও প্রতিরোধ যে প্রতিকারের চাইতে উত্তম এই ধারণা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ‘ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবার যে মডেল দেশব্যাপী প্রবর্তন করেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা আধুনিকায়নে সেটাই ছিল যুগান্তকারী প্রথম পদক্ষেপ। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সমন্বিত টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সক্ষম দৃঢ় একটি নবপ্রজন্ম সৃষ্টির পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে মান সম্পন্ন চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ করেছিলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা যেমন আজও নিশ্চিত হয়নি, তেমনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষাও আজ পরিকল্পিত নয়। আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাঙ্ক্ষিত প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করেনি। সাধারণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির জন্য বিদেশ গমন প্রবণতায় এখনো রয়েছে উচ্চ হার। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত সর্বজনীন জনবান্ধব হয়ে ওঠেনি। স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া দেশের জনগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার, কথাটির বাস্তব প্রতিফলন আজও প্রত্যাশিত মাত্রায় উপনীত হতে পারেনি। একটি পরিকল্পিত স্বাস্থ্য নীতির অনুপস্থিতি, চিকিৎসক- চিকিৎসা প্রার্থীর সম্পর্ক উন্নয়ন, ‘প্রতিরোধই যে প্রতিকারের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ’ এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের জন্য প্রতিশ্রতিবদ্ধ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এর অন্তর্ভুক্তি সূচকে ২০২১ সালে বাংলাদেশ ১০০-তে পেয়েছিল ৫২। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এ সূচকে বাংলাদেশের নিচে ছিল শুধু পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। বিএনপির ক্ষমতায় গেলে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির ভিত্তিতে উন্নত কল্যাণকামী রাষ্ট্রে বিদ্যমান ব্যবস্থার আলোকে সকলের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দারিদ্র্য বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত করা হবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির ৫ শতাংশ এর কম হবে না। প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশিক্ষিত নারী ও পুরুষ পল্লী স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, শিক্ষা এবং গবেষণা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, জনকল্যাণমুখী একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সকলের মতামতকে পুনঃমর্যদা দেওয়ার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে জনগণের কল্যাণে স্বাস্থ্য সংস্কার প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

ওষুধ শিল্প আওয়ামী লীগের একজন ব্যক্তির কাছে এতদিন কুক্ষিগত ছিল দাবি করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে রোগীদের মধ্যে বিদেশমুখিতা বেড়েছিল। এতে ভেঙে পড়ে দেশের স্বাস্থ্যখাত।

নিউজটি শেয়ার করুন