চাপে টিউলিপ সিদ্দিক, ব্রিটিশ প্রতিবেদন থেকে যা জানা যাচ্ছে

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে একটি কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে পদত্যাগের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে রয়েছেন।

সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস (এফটি) এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠার পর থেকে টিউলিপ সিদ্দিককে বেশ কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সাথে সম্পর্কিত একাধিক সম্পত্তির সাথে যুক্ত। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে, যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করছে।

ব্রিটিশ ছায়া স্বরাষ্ট্র সচিব ক্রিস ফিলপ বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পদের উৎস তার খালার কথিত দুর্নীতির লেনদেনের আয় থেকে এসেছে কিনা তা ব্যাখ্যা করার সময় এসেছে।

তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারকে এই প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত তাকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কোনও প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া, বা কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া তার শক্তি বা সততার অভাব দেখায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কেয়ার স্টারমার টিউলিপ সিদ্দিককে সমর্থন করছেন কিন্তু লেবার পার্টির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, শুরুর দিকে দলীয় নেতৃত্ব তার দিকে অবস্থান করলেও, তার আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়ায় তার অবস্থান ক্রমশ দুর্বল হয়ে উঠছে। এটি একটি বড় ধাক্কা হয়ে উঠছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা বলেন।

টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তিনি তা ব্যাখ্যা না করলে মন্ত্রী হিসেবে তার এই অবস্থান অযোগ্য।

টোরি দলের আরেক এমপি বেন ওবিস-জেক্টিন বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে নতুন এই তথ্য উদ্বেগজনক।

যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথির বরাত দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস শুক্রবার তাদের প্রতিবেদনে জানায়, টিউলিপ বিনা মূল্যে যে ফ্ল্যাট পেয়েছেন সেটি লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। এটি তাকে ২০০৪ সালে দেওয়া হয়। ২০০১ সালে এই ফ্ল্যাট ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে কেনা হয়। ফ্ল্যাটটির বর্তমান দাম নথিতে উল্লেখ করা হয়নি। তবে একই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাট গত আগস্টে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (প্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা) বিক্রি হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন