বাংলাদেশের রাস্তায় যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ অটোরিকশা।
এই যানটি দুর্ঘটনার জন্যও অনেকাংশে দায়ী। আমরা মজার ছলে যেটিকে “(টেসলা)” বলে থাকি, বাস্তবে সেটিই আজ সড়ক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই প্রায় ২৫ লক্ষ অটোরিকশা চলাচল করছে। সরকার একাধিকবার এই যানটির চলাচল নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিলেও, তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।
অটোরিকশাচালকরা অনেকেই বহু কষ্ট করে, ধার-দেনা করে, এমনকি সম্পদ বিক্রি করে এই যানটি কিনেছেন। তাদের কষ্ট দেখলে মায়াও লাগে। কিন্তু এটি একটি সমষ্টিগত সমস্যা—এবং সেটির সমাধান করতে হবে বৃহৎ স্বার্থে।
যেহেতু সরকার পুরোপুরি অটোরিকশা বন্ধ করতে পারছে না, অন্তত সংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যেন না ঘটে, সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
সম্প্রতি রাজারবাগ ট্রাফিক বিভাগের এক প্রশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিই:
অটোরিকশার যন্ত্রাংশের প্রায় সবকিছুই আমদানিকৃত—শুধু বডি তৈরি ও ফিটিং বাংলাদেশে করা হয়।
সরকার যদি দেশের কারখানাগুলোতে অটোরিকশার বডি তৈরির কাজ বন্ধ করে দেয়, তাহলে নতুন অটোরিকশা তৈরি বা বাজারে আসা অনেকাংশে কমে যাবে।
অটোরিকশা রাস্তায় নিষিদ্ধ করার চাইতে কারখানা পর্যায়ে উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করাই অনেক সহজ এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ।
ট্রাফিক বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেছিলেন, “উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নির্দেশনা দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারব।”
আমার প্রশ্ন হলো—এই মতামত কি আদৌ উচ্চপর্যায়ে পৌঁছাবে?
অন্যদিকে, সম্প্রতি বুয়েট একটি আধুনিক অটোরিকশা মডেল উন্মোচন করেছে, যেখানে উন্নত ব্রেকিং সিস্টেম ও লুকিং গ্লাস সংযোজন করা হয়েছে। এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৫০,০০০ টাকা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো—বাংলাদেশে যে কোনো দক্ষ মেকানিক বর্তমান “মিশুক” বা অন্যান্য অটোরিকশাতেই এই উন্নত ব্রেকিং সিস্টেম ও লুকিং গ্লাস সংযোজন করতে পারেন।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়—বুয়েটের উদ্ভাবিত অটোরিকশা কেনার প্রয়োজনই বা কী?
লেখক,শিক্ষার্থী: মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।