ইসলামী রাজনীতি হলো এমন একটি আদর্শ শাসনব্যবস্থা, যেখানে কুরআন ও সুন্নাহকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। এটি শুধু ক্ষমতার জন্য নয়, বরং সমাজে ন্যায়বিচার, মানবিকতা, এবং জবাবদিহিমূলক শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যম।
১. আল্লাহর আইন অনুযায়ী শাসন
ইসলামী শাসনের প্রথম ও প্রধান ভিত্তি হল আল্লাহর বিধান অনুযায়ী শাসন করা। কুরআনে বলা হয়েছে:
﴿وَمَن لَّمْ يَحْكُم بِمَا أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْكَـٰفِرُونَ﴾
“যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী বিচার করে না, তারাই কাফির।”
— সূরা আল-মায়িদাহ: ৪৪
২. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ইসলামী রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য
শাসকের কাজ হলো সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহ বলেন:
﴿إِنَّ ٱللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَن تُؤَدُّواْ ٱلْأَمَـٰنَـٰتِ إِلَىٰٓ أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُم بَيْنَ ٱلنَّاسِ أَن تَحْكُمُواْ بِٱلْعَدْلِ﴾
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ করেন, যে তোমরা আমানতসমূহ তার প্রাপকের কাছে পৌঁছে দেবে এবং যখন মানুষের মাঝে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সাথে করবে।”
— সূরা আন-নিসা: ৫৮
৩. নেতৃত্ব একটি আমানত — ক্ষমতা নয়
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
«كلكم راعٍ، وكلكم مسؤولٌ عن رعيته»
“তোমরা সবাই দায়িত্বশীল, এবং প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।”
— সহীহ বুখারী: ৮৯৩, সহীহ মুসলিম: ১৮২৯
তিনি আরো বলেন:
«إِنَّا لا نُوَلِّي هَذَا العَمَلَ مَن سَأَلَهُ، وَلا مَن حَرَصَ عَلَيْهِ»
“আমরা এই দায়িত্ব (নেতৃত্ব) তাকে দেই না, যে তা চায়, কিংবা তা পাওয়ার জন্য আগ্রহী।”
— সহীহ বুখারী: ৭১৪৯, সহীহ মুসলিম: ১৭৩۳
৪. খিলাফতের আদর্শ — হযরত ওমরের (রা.) শাসন
হযরত ওমর (রা.) বলতেন:
“لو أن بغلة عثرت في العراق، لكنت مسؤولًا عنها لم لم تمهد لها الطريق يا عمر؟”
“ইরাকের মাটিতে যদি একটি খচ্চরও হোঁচট খায়, আমি ওমর হিসেবেও দায়ী হবো, কেন আমি রাস্তা সমতল করিনি?”
এই দৃষ্টান্ত বুঝিয়ে দেয়, শাসকের দায় কতটা গভীর এবং মানবিক।
মুল বক্তব্য:
ইসলামী রাজনীতি কেবল একটি স্লোগান নয়—এটি একটি দায়িত্ব, যা আল্লাহর বিধান, ন্যায়বিচার, জনসেবার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে। আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলামী রাজনীতি বাস্তবায়ন করতে হলে ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কুরআন-সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে।
ইসমাইল হোসেন
শিক্ষার্থী:তা”মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা