রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫
পড়ুন

জুলাই বিপ্লবে তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গীর কালো দিন

২০শে জুলাই২০২৪ ছাত্রজনতার হত্যার বিচারের দাবিতে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা, টঙ্গীর শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং শ্রমিক জনতা সহ তা’মীরুল মিল্লাত টঙ্গীর সামনের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সকাল থেকে অবরোধ করে প্রতিবাদী আন্দোলন জানায়। সকাল ১১টা থেকে দফায় দফায় ছাত্রলীগ ও পুলিশ যৌথ হামলা চালায় আন্দোলনকারীদের উপর। একপর্যায়ে উপর থেকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের উপর র‍্যাব গুলিবর্ষণ ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে হামলা করতে থাকে। বিকাল ৪ ঘটিকায় পুলিশ এবং ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় এশিয়া পাম্পের সামনে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার আলিম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী শহীদ নাসির শাহাদাত বরণ করেন। আলিম পরীক্ষার্থী ওমর ফারুক সহ অসংখ্য শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
১৮ই জুলাই সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা আসে। ১৮ই জুলাই বিএনএস সেন্টারের সামনে তা’মীরুল মিল্লাত কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের ভিপি আব্দুল্লাহ আল মিনহাজের নেতৃত্বে হাজার হাজার শিক্ষার্থী উত্তরার বিএনএসে অবস্থান নেয়। সেইসাথে উত্তরার আশেপাশের সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও বিএনএসে অবস্থান নেয়। সেদিন সকাল থেকেই ছাত্রজনতার উপর পুলিশ বিরতিহীনভাবে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও ছররা গুলি নিক্ষেপ করতে থাকে, কিন্তু তাদের এই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সেদিন সময় যত গড়াতে থাকে ছাত্র জনতার ঢল এবং আন্দোলন ততই তীব্র হতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ এলোপাতাড়ি ছাত্র জনতার উপর গুলি চালাতে থাকে। এতে করে তা’মীরুল মিল্লাতের ভিপি মিনহাজের চোখে গুলি লেগে তিনি আহত হন। এছাড়াওজুনায়েদুর রহমানসহ অনেক ছাত্র আহত হয়।
এক পর্যায়ে আন্দোলনকে দমন করার জন্য সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। তখন এই আন্দোলনের হাল ধরেন তা’মীরুল মিল্লাতের সাবেক ছাত্র আব্দুল হান্নান। তার একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলনের স্পৃহা কয়েকগুণ বেগবান হয়। ২০ তারিখের পর থেকে মিল্লাত এলাকায় অবস্থানরত সকলেই ছিল আতঙ্কিত। কারণ স্বৈরাচারী হাসিনার পুলিশ লীগ কখন কাকে জামাত-শিবিরের ট্যাগ ব্যবহার করে ধরে নিয়ে যায়, তাই সকলে সতর্ক থাকতে হতো। অনেকে ঘুমাতে পারেনি নিজ বাড়িতে। এমনকি ১৮ই জুলাইয়ে শহীদ শাকিল হোসেন পারভেজের জানাজার নামাজ মিল্লাত মাঠে আদায় করতে দেওয়া হয়নি। এবং প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন প্রিন্সিপাল মাওলানা মিজানুর রহমানকে ক্রসফায়ারের হুমকির অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের শহীদ নাসির গেটে ইটের দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দেয় হাসিনার পুলিশ লীগ। জুলাই বিপ্লবে মিল্লাত পরিবারের ৫ জন শহীদ বরণ করেন। তারা হলেন – শহীদ নাসির, শহীদ ওসমান পাটোয়ারী, শহীদ মুনতাসির রহমান আলিফ ও শহীদ শাকিল হোসেন পারভেজ।
তাতেও শিক্ষার্থীদের দমানো যায়নি। তারা তাদের ভাইদের রক্ত বৃথা যেতে দেয়নি। চূড়ান্তভাবে স্বৈরাচার হাসিনাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করে নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন বুনছে।

- বিজ্ঞাপন -spot_img

এ সম্পর্কিত আরো