মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০২৫
নিউজ পাঠান
মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০২৫
লেখা পাঠান

ছয়টি পারমাণবিক বোমা আছে ইরানের হাতে!

ইরান ছয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরির পর্যায়ে পৌঁছে গেছে—এমন দাবি করেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। সংস্থাটির প্রধান রাফায়েল গ্রসি জানিয়েছেন, ইরানের কাছে বর্তমানে ৬০ শতাংশের বেশি বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা আরও পরিশোধিত হলে পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা সম্ভব।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে পশ্চিমা বিশ্ব। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র বারবারই ইরানকে দমনের চেষ্টা চালিয়ে গেছে। ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ওপর একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তার ‘ম্যাক্সিমাম প্রেসার’ কৌশলের অংশ হিসেবে ইরানের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করতে দেশটির জ্বালানি তেল রপ্তানির পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি থামায়নি, বরং আরও জোরদার করেছে।২০১৯ সাল থেকেই ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সাধারণত ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন হয়, আর ইরানের সংগ্রহ করা ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতার হার ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন আইএইএ প্রধান। সংস্থাটির মতে, ইরানের হাতে বর্তমানে ২৫০ কেজি ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা থেকে ছয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব। ফলে এখনই তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, ইরানকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরেকটি বড় মাথাব্যথার কারণ হচ্ছে রাশিয়া। সম্প্রতি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে মস্কো সফর করেন। সেখানে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনসহ প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রাশিয়ার এই সহযোগিতা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পশ্চিমা বিশ্ব।অন্যদিকে, ইসরাইলও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঠেকাতে মরিয়া। ২০২৩ সালের এপ্রিল ও অক্টোবর মাসে ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। তবে এতে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছে ইরান।
এরই মধ্যে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান জানিয়েছে, মার্কিন প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি এগিয়ে নিচ্ছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের সেমনান ও পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে পারমাণবিক ওয়ারহেড স্থাপনের কাজও দ্রুত এগোচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, যদি ইরান সফলভাবে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা বলয় দুর্বল হয়ে পড়বে এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ক্ষমতার অবস্থানও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।ইরানের পরমাণু সক্ষমতা অর্জনের এই খবর বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন নজর রাখছে, পারমাণবিক শক্তি নিয়ে ইরান ও পশ্চিমাদের টানাপোড়েন শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল দিগন্তকণ্ঠ.কমে লিখতে পারেন আপনিও।

লেখার বিষয় সাহিত্য, ফিচার, প্রবন্ধ, মতামত, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি।

আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন digantakantho@gmail.com ঠিকানায়।

- বিজ্ঞাপন -spot_img

এ সম্পর্কিত আরো