১৭ই ফেব্রুয়ারি, সকাল ১০টায় তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হেফজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও মিল্লাত তদারকি কমিটির আহ্বায়ক ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তা'মীরুল মিল্লাত ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কুরবান আলী এবং মিল্লাত তদারকি কমিটির সদস্য অধ্যাপক জামাল উদ্দিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিল্লাতের শিক্ষকবৃন্দ ও টঙ্গী থানা জামাতের বিভিন্ন নেতাকর্মী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত অতিথিদের ফুল ও ব্যাচ দিয়ে বরণ করে নেন তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্র শিবিরের দায়িত্বশীলবৃন্দ। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এরপর তুরাগ শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা মিল্লাত থিম সং পরিবেশন করেন। মিল্লাতের শিক্ষার্থীরা আরবি ও ইংরেজি ভাষায় তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিজয়ী ও রানার্স আপ দলকে কাপ দেওয়া হয়। দেয়ালিকা ও বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে ১০ জনকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, "এই তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় কম্পিউটার ল্যাব, উন্নতমানের লাইব্রেরি সহ সকল সমস্যার বাস্তবায়ন সম্ভব। আমাদের মাননীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী যে পরিমাণ টাকা দেশ থেকে লুট করে নিয়ে দিল্লিতে আছেন, সেই পরিমাণ টাকা আমরা ফেরত পেলে দেশের উন্নতির অগ্রগতি কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এছাড়াও বিভিন্ন দেশে এবং আমাদের অনেক অনেক ব্যক্তিবর্গ রয়েছে যারা টাকা দেওয়ার জন্য এই রকম প্রতিষ্ঠান খুঁজছে। আপনাদের উচিত এই প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বমন্ডলে পরিচিত করার মাধ্যমে আমাদের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। নবী চলে গেলেন আর কোন নবী পৃথিবীতে আসবেনা, তাই নবীর ওয়ারিশ হিসেবে সেই সত্যের বাণী আমাদেরকেই পৌঁছে দিতে হবে। আমাদের এই তা'মীরুল মিল্লাতে ১৪ হাজার ছাত্র রয়েছে। মিল্লাতের আশেপাশের এলাকাতে সপ্তাহে ২ দিন শিক্ষার্থীদের এই এলাকাতে দাওয়াতি কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছাত্ররা বাস্তবমুখী জ্ঞান লাভ করতে পারবে। এই বাংলাদেশে মক্তব শিক্ষার বিপ্লব করতে হবে, এই শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।"
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, "যে সকল জামায়াত নেতারা এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে গেছেন তাদেরকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি। একটি জাতির পরিবর্তনের জন্য সাংস্কৃতিক পরিবর্তন করতে হয়। আমরা আশা করি মিল্লাতের ছাত্ররা সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতি রুখে দিতে ভূমিকা রাখবে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে সকল প্রকার সহযোগিতায় শরিক থাকবো, ইনশাআল্লাহ।"
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. কুরবান আলী বলেন, "আমাদেরকে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে অপসংস্কৃতিকে রুখে দিতে হবে। আমাদের চরিত্রকে উন্নত চরিত্রের আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।"
মিল্লাত টাকসুর ভিপির বক্তব্যে ইকবাল কবির বলেন, তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছাত্ররা তাদের আদর্শ ও চরিত্রের মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ হেফজুর রহমান বলেন, তা'মীরুল মিল্লাত পরিবার প্রতি বছরই ছাত্রদের মেধার বিকাশ ও সহপাঠ্যক্রমের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করছে। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতেও তারা মুসলিম মিল্লাতের জন্য ভূমিকা রাখবে।
এরপর অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তদের পুরস্কার দেওয়ার মাধ্যমে দুপুর ১২:৩০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।