নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘এতেমাদ’ উন্মোচন করে যে বার্তা দিল ইরান

ইরান রবিবার নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘এতেমাদ’ (শাব্দিক অর্থ বিশ্বাস) উন্মোচন করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ১,৭০০ কিলোমিটার (১,০৫৬ মাইল) দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। তেহরানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এই ক্ষেপণাস্ত্রের ছবি সম্প্রচার করে জানায়, এটি ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি সর্বশেষ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, এটি মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, ‘প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও মহাকাশ প্রযুক্তি উন্নয়নের লক্ষ্য হলো এমন একটি অবস্থান তৈরি করা, যাতে কেউ ইরানের ভূখণ্ডে হামলার সাহস না করে। ’

এই ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন অনুষ্ঠানটি ইরানের জাতীয় মহাকাশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত হয় এবং ১৯৭৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিতে ইসলামি বিপ্লবের ৪৬তম বার্ষিকীর কয়েকদিন আগে অনুষ্ঠিত হলো।
ইরান গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে তার সামরিক শক্তি প্রদর্শন করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে বড় আকারের সামরিক মহড়া এবং ভূগর্ভস্থ সামরিক ঘাঁটির প্রকাশ। এর পাশাপাশি, ইরান পশ্চিমাদের সাথে তার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফেরার ইচ্ছার ইঙ্গিতও দিয়েছে।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এরপর ইরান নিজস্ব সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের দিকে মনোযোগ দেয়।

১৯৮০-১৯৮৮ সালের ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার কারণে বাধ্য হয়ে ইরান নিজস্ব অস্ত্রভাণ্ডার গড়ে তোলে।
বর্তমানে ইরানের কাছে নিজস্বভাবে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ড্রোনসহ নানা ধরনের উন্নত অস্ত্র রয়েছে। নতুন ‘এতেমাদ’ ক্ষেপণাস্ত্র ইরানের প্রতিরক্ষায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

ইরানের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনী তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার অগ্রগতি তুলে ধরেছে। তবে পশ্চিমা বিশ্ব এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

ইরানের এই উদ্যোগ তাদের নিরাপত্তার জন্য হলেও মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন