গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে (ডিআরসি) সরকারি বাহিনী এবং এম২৩ বিদ্রোহীদের মধ্যে পাঁচ দিনের সংঘাতে কমপক্ষে ৭০০ জন নিহত এবং ২,৮০০ জন আহত হয়েছে। জাতিসংঘ এক জরুরি বার্তায় এ তথ্য জানায়। ওই বার্তায় সংস্থাটি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং সরকারি অংশীদাররা এ তালিকা তৈরি করেছে। এতে সংঘাতের বিস্ময়কর ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যায়। তবে কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, আরও তথ্য পাওয়া গেলে নিহতের সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। বলেছে, প্রায় ৩০ লাখ মানুষের আবাসস্থল গোমায় পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসা সম্পদের সরবরাহ হ্রাসের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির মুখপাত্র শেলি ঠাকরাল বলেছেন, মানুষের খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, চিকিৎসা সরবরাহ সত্যিই ফুরিয়ে যাচ্ছে। এটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
তবে আশার বিষয় হচ্ছে, সরকারি বাহিনী এবং রুয়ান্ডার সমর্থিত বিদ্রোহীদের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে তীব্র সংঘর্ষের পর বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেজ কাইকোয়াম্বা ওয়াগনার অভিযোগ করেছেন, রুয়ান্ডা অবৈধভাবে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআরসি) দখল করতে এবং কঙ্গোর শাসনক্ষমতা পরিবর্তন করতে চেষ্টা করছে। তার মতে, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগমে বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
রুয়ান্ডার সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা গোমার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে। কঙ্গোর রাজধানী কিনসাসার দিকে অগ্রসর হওয়ার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু বাসিন্দারা বলছেন, কৌশলগত শহরটি এখনো বিদ্রোহী এবং সেনাবাহিনী উভয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সংঘর্ষে গোমায় ১৭ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ১৩ জন দক্ষিণ আফ্রিকান, তিনজন মালাউইয়ান এবং একজনের জাতীয়তা জানা যায়নি। এরপর সেখানকার পরিস্থিতি বিশ্ব মিডিয়ায় গুরুত্ব পায়। তেমনি বাংলাদেশের অনেকেও গোমার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ, কঙ্গোয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশি সেনারাও মোতায়েন রয়েছেন। অবশ্য তারা নিরাপদ আছে বলে জানা গেছে।