মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনার গ্যালারি ১৫,০০০ দর্শকের উচ্ছ্বাসে ভরে উঠেছিল। কোর্টের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমেরিকান মাডিসন কিস নিজের মাথা ধরে অবাক হয়ে ছিলেন। আর অবাক হবেনই বা না কেন? সাত বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে, তিনি যে অবশেষে পেলেন তার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি।
মাডিসন কিস, ১৯ নম্বর বাছাই হিসেবে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও, ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আরিনা সাবালেঙ্কাকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করেন। ৬-৩, ২-৬, ৭-৫ সেটে নাটকীয় এই জয়ে কিস তার ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জিতলেন।
বেলারুশের সাবালেঙ্কা অস্ট্রেলিয়ার হার্ড কোর্টে টানা ৩৩টি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ২৯ বছর বয়সী কিস, তার শক্তিশালী বেসলাইন গেম আর আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স দিয়ে এই ধারায় আঘাত হানেন।
ম্যাচের শুরু থেকেই সাবালেঙ্কার স্নায়ুচাপ স্পষ্ট ছিল। তার দ্বিতীয় সার্ভে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে, প্রথম সেটেই ডাবল ফল্টের কারণে দু’বার সার্ভ ব্রেক দেন। অপরদিকে কিসের আক্রমণাত্মক খেলা, প্রথম সার্ভের দৃঢ়তা এবং ১১টি দুর্দান্ত উইনার তাকে এগিয়ে রাখে।
সাবালেঙ্কা দ্বিতীয় সেটে ফিরতে পারলেও, তৃতীয় সেটে কিসের ক্রস-কোর্ট ফোরহ্যান্ড উইনারে সব শেষ হয়ে যায়। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে সাবালেঙ্কার হতাশা স্পষ্ট ছিল; তবে পরাজয়ের পর তিনি কিসকে অভিনন্দন জানান।
‘স্বপ্ন সত্যি হলো,’ বললেন কিস
ম্যাচ শেষে আবেগতাড়িত কিস বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরে এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কখনো ভাবিনি আবার এই অবস্থায় আসতে পারব।’ তার স্বামী ও কোচ, বিঅর্ন ফ্রাটাঞ্জেলোও কিসের এই অর্জনে গর্বিত।
২০১৮ সালে ফরাসি ওপেন ও ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে পৌছানোর পর কিস দীর্ঘ সময় ইনজুরির কারণে টেনিস কোর্টের বাইরে ছিলেন। ২০২২ সালে আবার শীর্ষ দশে ফিরলেও শিরোপা জয় ছিল অধরা।
এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সাবালেঙ্কার পাশাপাশি ইগা সিয়াটেক, ড্যানিয়েল কলিন্স এবং এলেনা রাইবাকিনার মতো তারকাদের হারিয়ে কিস নতুন উচ্চতায় পৌঁছান।
সাবালেঙ্কার টানা তৃতীয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শিরোপা জয়ের স্বপ্ন শেষ হলো। কিস ২০০৯ সালের পর প্রথম নারী হিসেবে কোনো মেজরে শীর্ষ দুই বাছাইকে পরাজিত করলেন। এই জয়ের মাধ্যমে টেনিস বিশ্বে আরেকটি চমকপ্রদ অধ্যায়ের সূচনা করলেন আমেরিকার এই তারকা।