অবশেষে সীমান্তে বসছে টাওয়ার, কমবে ভারতীয় সিমের ব্যবহার

নানা দেন-দরবারের পর সীমান্তে শূন্যরেখার কাছাকাছি টাওয়ার বসানোর সুযোগ পাচ্ছে মোবাইল অপারেটররা। সরাসরি বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে শূন্যরেখা থেকে আট কিলোমিটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা যাবে বলে জানিয়েছে তারা। তবে পার্বত্য তিন জেলা আর কক্সবাজার সীমান্তে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনুমতি লাগবে।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিটিআরসির জারি করা নতুন নির্দেশিকায় এসব শর্ত রাখা হয়েছে। আর অপারেটররা বলছে, নতুন সিদ্ধান্তে সীমান্তে বাড়বে সেবার মান, কমবে ভারতীয় সিমকার্ডের ব্যবহার।

দেশের পঞ্চগড় সীমান্তে মহানন্দা নদীর ওপারে ভারতের কাটাতারের বেড়ার পাশে চোখে পড়বে মোবাইল টাওয়ার। সেখান থেকে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে ভারতীয় মোবাইল নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সীমান্তের মানুষজন ফেসবুক ব্রাউজিং, ভিডিও কলে কথা বলা এবং অন্যান্য ইন্টারনেটভিত্তিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা জানান, আমাদের এখানে কোনো মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। অনেক দূর বাজারে গিয়ে নেট ব্যবহার করতে হবে। আরেকজন জানান, অফিসের অনলাইনের কাজগুলো আছে, সেগুলোও করতে পারি না; নেট সমস্যার কারণে। আমাদের দেশের মোবাইল ফোনের সিমে নেটওয়ার্ক থাকে না, আবার ভারতীয় সিমের থাকে। তাই সবাই এটাই বেশি ব্যবহার করে।

মোবাইল অপারেটরদের দাবি, সীমান্তে একটি টাওয়ার বসানোর অনুমতি পেতে ১ থেকে ২ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। অথচ ২০২২ সালে ভারত বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় দ্রুতই সীমান্তে টাওয়ার বসিয়েছে সেদেশের মোবাইল অপারেটররা।

এমন প্রেক্ষাপটে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে বিটিআরসি। যেখানে পার্বত্য জেলা বাদে অন্যান্য সীমান্তে শূন্যরেখা থেকে আট কিলোমিটারের মধ্যে সরাসরি বিটিআরসির অনুমোদন নিয়ে টাওয়ার স্থাপনে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আগের মত লাগবে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অনুমতি। তবে পরবর্তীতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কোনো আপত্তি উঠলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা আছে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী সীমান্তে টাওয়ার স্থাপন করলেও কাভারেজ দেশের ভেতরেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। পার্বত্য তিন জেলা এবং কক্সবাজারের জন্য অভিন্ন নীতিমালার কথা বলছেন মোবাইল অপারেটররা।

বাংলা লিংকের চিফ করপোরেটর অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, পাশের দেশের ভারত যেসব মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করেছে, সেটা আমাদের এখানে চলে আসছে, তারা নিজেদর কন্ট্রাল করছে না, আমাদের এখানে চলে আসছে। ফলে আমরা অনেক কিছু কাভারেজ দিতে পারছি না।

রবির চিফ করপোরেটর অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, দেশের মানুষের স্বার্থে এবং নিরাপত্তার স্বার্থেই সীমান্ত ও পাহাড়ে এটা করা উচিত।

অপারেটরদের তথ্যমতে, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে প্রায় ১ কোটি মোবাইল গ্রাহক রয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন