বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে মনোযোগ বেইজিংয়ের

বাংলাদেশের বাণিজ্যের বড় অংশীদার চীন। আমদানি পণ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ আনা হয় দেশটি থেকে। আর বাণিজ্য প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার। পণ্য আমদানীতে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দ এখন চীন।        

১৯৭৫ সালে পহেলা ডিসেম্বর দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু হয় বাংলাদশের। তবে, চীনে আমাদের রপ্তানি খুব একটা নেই, তাই বড় বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে চলছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য।

পণ্য আমদানির উৎস হিসেবে এক সময় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দের দেশ ছিল ভারত, তবে এক যুগ আগেই তা পাল্টে গেছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে চীনা পণ্যের হিস্যা বাড়ছে বাংলাদেশের বাজারে, এখনো তা বজায় আছে। অর্থাৎ পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দের দেশ চীন।  

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশে গত আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে আরও বাড়াতে মনোযোগ দিচ্ছে দেশটি। আর দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা দিতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে চীন গেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ঢাকা বেইজিং বন্ধুত্বের ৫০ বছরের মাহেন্দ্রক্ষণে প্রধান উপদেষ্টাকে সফরে নিতে চায় দেশটি। আর এজন্য পাঠাতে পারে বিশেষ বিমান। দুই দেশের সম্পর্কের সূবর্নজয়ন্তীতে, দেশটি সফরে নিতে চায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টোকে। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের ধারাবাহিকতায় সর্বোচ্চ স্তরের সফরে আগ্রহী বেইজিং। যা ইতিবাচক বলছেন, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা।

যদিও মার্চে বিশেষ সম্মেলন সামনে রেখে আমন্ত্রণ হওয়ায়, এখনো কিছুটা অশ্চিয়তা রয়েছে বাংলাদেশের পক্ষে। কারণ, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। তবে, বিশেষ বিমানে ড. ইউনূসকে নিতে সফরে নিতে আগ্রহী চীন।

সূত্রগুলো বলছে, স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী চীন। চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় একটি বিশেষায়িত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণে বেইজিংকে সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা। পূর্বাচলে প্রথম মৈত্রী হাসপাতাল নির্মাণে বাংলাদেশ দ্রুত সমঝোতা স্মারক সই করতে আগ্রহী।

তিস্তা প্রকল্পে এখনো আগ্রহী চীন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে অনেক দিন আলাপ আলোচনও চলছে। তারই প্রেক্ষপটে ২০১৬ সালে সই হওয়া নদীর পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমঝোতা স্মারক নবায়ন হচ্ছে।

ব্রহ্মপুত্র নদের উজান অংশে চীনের মেগা বাঁধ নির্মাণ নিয়ে আলোচনা চলছে। তিব্বতে প্রায় ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে দেশটি। এর ফলে অবশ্য ভাটির দেশগুলোর পানির প্রাপ্যতা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। ইতিমধ্যে ভারত এ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিষয়টি পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বৈঠকে আলোচনায় রয়েছে।

বাংলাদশ মনোযাগ দিতে চায়, চীনের ঋণের সুদ হার নমনীয় করতে। সুদের হার ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে আনার পাশাপাশি ঋণের প্রতিশ্রুতি ফি দশমিক ৫ শতাংশ বাতিল চায় ঢাকা।