টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি ব্রিটেনের বিরোধীদলীয় নেতার

বিভিন্ন অভিযোগ ও সমালোচনায় জর্জরিত টিউলিপ সিদ্দিককে এবার বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, কনজারভেটিভ পার্টির এই নেত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া পোস্টে টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানান। লেখেন, ‘কিয়ার স্টারমারের উচিত এখনই তাঁকে বরখাস্ত করা। প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, অথচ তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ।’

কেমি ব্যাডেনক আরও বলেছেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমান সরকারের জন্য একটি বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার শাসনের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’

এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপিরাও যুক্তরাজ্যের এই সিটি মিনিস্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন।

মূলত বাংলাদেশে আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তে যুক্তরাজ্যের এই মন্ত্রী ব্যাপক চাপে রয়েছেন। এমনকি দুর্নীতির দায়ে মন্ত্রিত্ব ছাড়তেও ক্রমবর্ধমান চাপ রয়েছে টিউলিপের ওপর।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মূলত টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য, তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি ড. ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেছিলেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের দেয়া লন্ডনের সম্পত্তিতে বসবাস করার বিষয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘তিনি যেসব সম্পত্তি ব্যবহার করেছেন তা তদন্ত করা উচিত এবং যদি সেগুলো লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত হয়ে থাকে, তবে সেগুলো বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত দেওয়া উচিত।’

যদিও টিউলিপ সিদ্দিক কোনো ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি।’

ব্যাডেনোচ বলেন, ‘সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন।’

তিনি আরও বলেন, এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার (সাবেক) সরকারের সাথে তার যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে ৯ জানুয়ারি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তাঁকে পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হলে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন এমন প্রার্থীদের নাম প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের জ্যেষ্ঠ সহযোগীরা বিবেচনা করছেন।

ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তারা সপ্তাহান্তে যুক্তরাজ্যের এই ট্রেজারি মন্ত্রীর স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন এমন প্রার্থীদের চিহ্নিত করেছেন বলেও জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন