উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ (৭ জানুয়ারি) লন্ডনে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কাতারের আমিরের পাঠানো ‘বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ রাতেই লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন বেগম খালেদা জিয়া।
চিকিৎসক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ খালেদা জিয়ার সফর সঙ্গী হচ্ছেন ১৫ জন। লন্ডনে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে যাওয়ার কথা রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই আর্থাথ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন।
স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বিবেচনায় এবং পরিপূর্ণ চিকিৎসার জন্য শুরু থেকেই বিদেশে মাল্টিডিসিপ্লিনারী হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বিগত সরকারের সময় দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিদেশে যাওয়ার আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয় অন্তত ২০ বার।
হাসিনা সরকারের এমন নেতিবাচক আচরণকে চরম মানবতাবিরোধী ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহি:প্রকাশ বলে আসছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশব্যাপী টানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে দলটি।
তবে ২৪ এর জুলাই-আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পাল্টায় দৃশ্যপট। সব অভিযোগ থেকে দায়মুক্ত হন খালেদা জিয়া। আপিল বিভাগের রায়ে দুদকের দুই মামলায় খালাস পাওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক ৩৭টি মামলাই বাতিল হয় বেগম জিয়ার।
অভ্যুত্থানের পরদিনই নিজের পাসপোর্ট ফিরে পান বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর শুরু হয় বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ২৭ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনে আঙ্গুলের ছাপ দেন। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের ভিসা নিয়েছেন খালেদা জিয়া।
সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই চিকিৎসা নিতে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন বেগম জিয়া। ওই বছরের ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরেন। সেসময় খালেদা জিয়া যুক্তরাজ্যের চিকিৎসক ডা. হ্যাডলি ব্যারির চিকিৎসাসেবা নিয়েছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার এবারের সফর শুধু চিকিৎসার জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ নয়, বরং দীর্ঘ ৭ বছর পর লন্ডনে থাকা বড় ছেলে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হবে তার। দেখা হতে পারে আরেক ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমানসহ দুই নাতনির সঙ্গেও।