বছরের শুরুতেই চুয়াডাঙ্গায় শৈত্যপ্রবাহ, বিপর্যস্ত জনজীবন

বছরের শুরুতে দ্বিতীয় দফায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা। এক দিনের ব্যবধানে জেলার তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শীতার্ত মানুষ।

এই শীতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে কর্মজীবী মানুষের ওপর। হাড়কাঁপানো শীত ও কুয়াশার মধ্যেই তাদের কর্মস্থলে ছুটতে হচ্ছে।

আজ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল নয়টার দিকে তাপমাত্রা হয়েছে এই জেলায় ১০. ৮ ডিগ্রি  সেলসিয়াস।

চুয়াডাঙ্গা সরদারপাড়ার বাসিন্দা ও মৎস্য শ্রমিক আশিক সরদার বলেছেন, তীব্র ঠান্ডায় ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে যেভাবে শীত পড়ছে, মাছ ধরতে পারছি না। পেটের দায়ে পুকুরে নামতে হচ্ছে।

ভ্যানচালক টোকেন আলী বলেন, শীতের মধ্যে ঘর থেকে বাইরে বের হমে মন চায় না। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না। তাই বাইরে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু রাস্তাঘাটে লোকজন নেই। যাত্রী পাচ্ছি না।

এদিকে শীতের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়ছে। সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের পরামর্শক মাহবুবুর রহমান বলেন, শীতের কারণে হাসপাতালে দুই ধরনের শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ঠান্ডাজনিত রোগ ও রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া। প্রতিদিন বহির্বিভাগে শিশু রোগীর চাপ বেড়ে যাচ্ছে। আন্তঃবিভাগে শিশু ওয়ার্ডে গড়ে ৬০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এ ছাড়া ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও ৫০ থেকে ৬০টি করে রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

অন্যদিকে গত কয়েক দিনের ঘন কুয়াশার কারণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আলুক্ষেত ও বোরো ধানের বীজতলা রক্ষায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে।

অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ধানের বীজতলা বিকেলে সেচ দিয়ে পরের দিন সকালে পানি বের করে দিতে হবে। এ ছাড়া সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে রাতের বেলা ঢেকে দিতে হবে। বীজতলা চাল হলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলুক্ষেতে আগামধসা ও নাবিধসা ছত্রাক যাতে না লাগে, সে জন্য ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে বলা হয়েছে। সার্বিক বিষয় দেখভাল করতে মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, মাঝে কিছুদিন বিরতি দিয়ে জেলার ওপর দিয়ে আবারও শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে। এ অবস্থা আরও কয়েক দিন চলতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন