শান্তিতে নোবেলজয়ী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। স্থানীয় সময় রোববার তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে জিমি কার্টার সেন্টার।
তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, জো বাইডেনসহ বিশ্ব নেতারা। তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অর্ধনমিত রাখা হয়েছে হোয়াইট হাউজ ও ক্যাপিটল হিলের পতাকা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিমি কার্টারের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। ৮ দিন ধরে চলবে শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর জর্জিয়ার প্লেইনসে তাঁকে সমাহিত করার পরিকল্পনা করেছে কার্টারের মেমোরিয়াল সার্ভিস।
জিমি কার্টার গতকাল বিকেলে জর্জিয়ার প্লেইনস শহরে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। গত অক্টোবরে ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন এই রাজনীতিবীদ।
কৃষক থেকে প্রেসিডেন্ট
১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর জর্জিয়ার প্লেইনস শহরে জন্মগ্রহন করেন জিমি কার্টার। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। তাঁর পুরো নাম জেমস আর্ল কার্টার জুনিয়র। একজন কৃষক ও দোকানির চার সন্তানের একজন ছিলেন তিনি।
১৯৪৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল একাডেমি থেকে স্নাতক পাস করেন জিমি কার্টার। এরপর পারমাণবিক সাবমেরিন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৬১ সাল পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন। পরে ওই চাকরি ছেড়ে পরিবারের বাদাম চাষাবাদের ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব নেন।
এরপর ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ার স্টেট সিনেটরের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান। ১৯৭৭ সালে ডেমোক্র্যাট দল থেকে ৩৯তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জিমি কার্টার। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করেন। সেসময় অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকটের মধ্যেই তাঁকে কাজ করতে হয়েছিল।
এরপর দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে রোনাল্ড রিগানের কাছে হেরে রাজনীতি থেকে অবসরে যান। তখন তার বয়স ছিল ৫৬ বছর। জনপ্রিয়তা হারিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজের সুনাম ফিরে পান জিমি কার্টার। মানবিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জর্জিয়ার প্লেইন্সে তাঁর বাড়িতে ‘হসপিস কেয়ার’-এ ছিলেন জিমি কার্টার। স্ত্রী রোজালিন কার্টারের সঙ্গে সেখানে থাকতেন তিনি। তবে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর মারা যান সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি রোজালিন। ৪ সন্তান ও ১১ নাতি-নাতনি রেখে গেছেন জিমি কার্টার।