ব্যবসা বাণিজ্যের বিভিন্ন খাতে করছাড় দেয়ার সমালোচনা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। বলেছেন, গত ৫০ বছর ধরে আমরা করছাড়া দিয়ে শিশু লালনপালন করছি; আর কতকাল লালন করব? অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব প্রশ্ন রাখেন, কর-জিডিপি অনুপাত না বাড়লে, এতো সম্পদের জোগান আসবে। আর এনবিআর চেয়ারম্যান বললেন, করদাতাদের এনবিআরে আসতে হবে না, সে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
পৃথিবীতে যেসব দেশের কর-জিডিপির অনুপাত সবচেয়ে কম, বাংলাদেশ সেই তালিকায় অন্যতম। দেশে এখন কর-জিডিপির অনুপাত ৮ শতাংশের নিচে। এই কর জিডিপির অনুপাত কম হওয়ার অন্যতম কারণ হলো বছরের পর বছর ধরে দিয়ে যাওয়া করছাড় বা অব্যাহতি।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূল্য সংযোজন কর- মূসক অবকাশ উন্মুক্ত না থাকলেও আর সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করাসহ নিয়মনীতি পরিপালন করা গেলে কয়েক লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আসবে কেবল এ খাত থেকে।
সকালে, ভ্যাট সপ্তাহের অনুষ্ঠানে যোগ দেন অর্থ উপদেষ্টা। রাজস্ব ভবনে যার আয়োজন করে এনবিআর। অনুষ্ঠানে, উপদেষ্টা করছাড়ের সমালোচনা করেন। কথা বলেন, রাজস্ব কর্মকর্তাদের মানসিকতাও নিয়েও। তবে সম্প্রতি কয়েক বছরে ভ্যাট–ছাড়ের পরিমাণ কমাতে শুরু করেছে এনবিআর।
অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব অবশ্য বলেন, রাতারাতি কর করছাড় প্রত্যাহার করা যাবে না। এতে চাপে পড়বে শিল্প খাত। তবে, রাজস্ব বাড়ানো না গেলে, এতো সম্পদ আসবে থোকা থেকে, প্রশ্ন তোলেন সচিব।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানালেন, করদাতাদের তার অফিসে আসতে হবে না, নেয়া হয়েছে তার পদক্ষেপ। মুখ দেখাদেখি হবে না রাজস্ব কর্মকর্তা আর করদাতাদের। তবে, জনগণ মূসক দিলেও ব্যবসায়িরা অনেক সময় তা তসরুপ করে, মন্তব্য করেন চেয়ারম্যান।
ব্যবসায়িরা বলেন, তারা কর দিলেও, করছাড়ের অর্থ কোথায় ব্যবহার হচ্ছে সেটি জনগণের মনে প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত করা গেলে, কর সংস্কৃতি গড়ে তোলা যাবে।
২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে আসবে, যাকে বলে এলডিসি উত্তরণ হবে। তাই করছাড়ের এসব সুযোগ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে হবে নিজেদের।